Durrushehver Sultan : The Ottoman Begum Sahiba of Hyderabad (Part 1)

 


১৯১৪ সাল, উসমানীয়দের শেষ পর্যায়, ঠিক এমন সময়েই তৎকালীন উসমানীয় শাহাজাদা এবং ভবিষ্যতে উসমানীয়দের ও ইসলামের শেষ খলিফা সুলতান দ্বিতীয় আব্দুলমাজিদের ঘরে জন্ম নেয় শাহাজাদী দুররুশেহভার সুলতানা। 


Little Durrushehver Sultan in Istanbul (Constantinople)

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দুর্ধর্ষ পরাজয় অতঃপর গ্রীক-তুর্কি যুদ্ধ, সেভের চুক্তি, ইত্যাদি সংঘর্ষের জেরে ১৯২২ সালে উসমানীয়দের পতন ঘটলে পরে ১৯২৪ সালের মার্চ মাসে তার পরিবারকে নির্বাসন ঘোষণা করা হলে তার পরিবার ফ্রান্সে আশ্রয় নেয়।নির্বাসনকালে তাদেরকে কোনো সম্পদ ছাড়া তাড়িয়ে দেওয়া হলে সম্পূর্ণ উসমানীয় পরিবারই একটি জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় পরে। তখন "ব্রিটিশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি" বিশ্বজুড়ে সকল মুসলিম শাসকদের নিকট খলিফার হয়ে আবেদন করলে ভারতের খিলাফত আন্দোলনের প্রমুখ ব্যক্তি শওকত আলী এবং তার ভাই মোহাম্মদ আলী, ভারতের হায়েদ্রাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলী খান সাহায্যের হাত বাড়ায়। তারা প্রতি মাসে পরিবারের বেশ কিছু ব্যক্তিদের ৩০০ পাউন্ড করে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। 

little durrushehver sultan (left one) on Sabiha Sultan's Wedding.

দুররুশেহভার সুলতানার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সৌন্দর্য এবং রাজনৈতিক কারনে এক সময় পারস্যের শাহ, মিশরের রাজা প্রথম ফুয়াদ, হায়েদ্রাবাদের নিজাম মীর ওসমান আলী খান তাদের নিজ নিজ ছেলেদের বউ বানাতে খলিফাকে প্রস্তাব দেন। শুধু তারাই নন, খলিফার চাচাতো ভাই ৩৪তম উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় আব্দুলহামিদের ছেলে শাহাজাদা মেহমেদ আবিদ-ও তাকে বিয়ের প্রস্তাব জানালে, খলিফা সকলের প্রস্তাব নামঞ্জুর করে দেন। কেননা ঐ সময় শাহাজাদীর বয়স বিয়ের জন্য বেশ কম ছিল।

Durrushehver Sultan at age of 9 & half.

১৭ বছর বয়সে, ১৯৩১ সালে, হায়েদ্রাবাদের নিজামের পরিবার খলিফাকে নানাভাবে সাহায্য করায় এবং পাশে থাকায় খলিফা নিজামের বড় ছেলে আজম ঝাঁ-এর সাথে মেয়ে বিয়ে দিতে সম্মতি জানায়। তবে বিয়ের দেনমোহর খলিফা ৫০ হাজার পাউন্ড চাওয়ায় নিজাম তা অতিরিক্ত মনে করেন এবং এক পর্যায়ে বিয়ে না হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ঠিক সেই সময়ে শওকত আলী মধ্যস্থতা করতে আসেন এবং ৫০ হাজার পাউন্ড দেনমোহরে দুররুশেহভার সুলতানার সঙ্গে নিজামের বড় ছেলে আজম ঝাঁ এবং খলিফার বোনের মেয়ে শাহাজাদী নিলুফার সুলতানাকে নিজামের পরবর্তী ছেলে মোয়াজ্জেম ঝাঁ-এর সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। যা উভয়পক্ষই সহজে মেনে নেয় এবং ১২ নভেম্বর ১৯৩১ সালে দুই বিয়ে একসাথে অনুষ্ঠিত হয়।  

Durrushehver sultan, Caliph Abdulmejid ii (Middle) &
Azam Jah of Hyderabad.

Durrushehver Sultan (left), Azam Jah (Left), Moazzem Jah (Right)
& Niloufer Sultan (left) on Their Wedding day At France.

উক্ত বিয়ে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বে এক বিরাট বিস্ময় ছিল। একদিকে ছিল অসাধারণ জাকজমক বিয়ে যা সমস্ত পত্র-পত্রিকায় ছাপা হচ্ছিল। অনেকে একে "আলিফ লায়লা" কাব্যের বিয়ে বলেও সম্বোধন করেছে। অন্যদিকে বিস্ময় ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের। কেননা একজন নিজামের ছেলে ৬০০ বছর পৃথিবীতে দাবিয়ে চলা উসমানীয় সম্রাজ্যের এবং খলিফার মেয়ে বিয়ে করেছিল, যা তাদের ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয় ধার্মিক রাজনীতিতে। 

During Wedding Ceremony of Durrushehver-Azam Jah & Niloufer-Moazzem Jah. 

বিয়ের পর নিজাম তার পুত্রবধূকে "দুরদানা বেগম শাহিবা" উপাধি দেয়। এবং নানা কর্মের মাধ্যমে দুররুশেহভার সুলতানা ভারতে খ্যাতি অর্জন করেন। দ্বিতীয় পর্বে আমরা তার খ্যাতি এবং বিয়ে পরবর্তী জীবন নিয়ে আলোচনা করবো। সাথে থাকুন ধন্যবাদ।


Source:

1. Son Halife Abdulmecid Efendi - By lale ucan.

2. The Progressive Princess of Hyderabad.

3. The Genealogy of the imperial ottoman family (2005).