আমরা প্রথম পর্বে জেনেছি কিভাবে দুররুশেহভার সুলতান তার পরিবারের জন্য একজন উসমানীয় শাহাজাদী থেকে ভারতের হায়েদ্রাবাদের দুরদানা বেগম শাহেবা হয়েছিলেন। যারা প্রথম পর্ব পড়তে পারেননি তাদের জন্য নিচে লিংক দেওয়া হয়েছে। আজকে আমরা জানবো তার বিবাহ পরবর্তী জীবন সম্পর্কে।
![]() |
| DurruShehver Sultan |
![]() |
| Durrushehver Sultan with Mukarram Jah |
![]() |
| Durrushehver Sultan & Azam jah with Their children, muffakham jah (left) & Mukarram jah (right) |
তিনি সুন্দরের সাথে অনেক জ্ঞানী এবং প্রতিভাশালী ছিলেন। তিনি ফরাসি, তুর্কি, ইংরেজী এবং উর্দুতে বেশ পটু ছিলেন। এছাড়াও তিনি একজন চিত্রশিল্পী এবং কবি ছিলেন।
তিনি তার জীবনের বেশ কিছু সময় সমাজসেবা এবং লোক কল্যানে ব্যয় করেছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
বাগ-এ-জাহানারা তে মেয়েদের জন্য তার নির্মিত প্রিন্সেস দুররুশেহভার জুনিওর কলেজ, ওসমানীয়া জেনেরাল হাসপাতাল, বেগমপেট বিমানবন্দরের ১ম টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপম, বিখ্যাত আজমল খান তিব্বিয়া কলেজ হাসপাতাল উদ্ভোদন ইত্যাদি।
![]() |
| Princess Durru Shehvar Institute of Medical Technology. |
![]() |
| Princess Durru Shehvar Junior College for women, Yakutpura |
![]() |
| osmania general hospital |
![]() |
| Begumpet Airport, Hyderabad. |
তিনি এবং তার বোন নিলুফার সুলতাম একসঙ্গে হায়েদ্রাবাদে নারী অধিকার এবং নারী উন্নয়ন সহ ব্যাপক বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। নিজাম ওসমান আলী খান তার পুত্রবধূদের গর্বের সঙ্গে তার প্রাসাদের রত্ন বলে ডাকতেন।তাদের দুইজনকেই সকল দিকে ছাড় দিয়েছিলেন। ইউরোপের নানা প্রান্তে নানা অনুষ্ঠানে, প্রদর্শনীতে তাদের পাঠাতেন। সকলের কাছে দুই বোন তাদের অত্যাধিক সৌন্দর্য, সমাজকর্ম, শৈলীর প্রতিমারূপে এবং পরোপকারী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন।
দুররুশেহভার সুলতান তার বান্ধবী রানি কুমুদিনীর সঙ্গে ঘোড়া চড়তেন, গাড়ি চালাতেন এবং টেনিস খেলতেন বলে জানা যায়। এককথায় তিনি তৎকালীন সময়ে হায়েদ্রাবাদের একজন যশস্বী ব্যক্তিতে রূপান্তর হয়েছিলেন।
ব্রিটিশ লেখক এবং সরকারী কর্মকর্তা ফিলিপ ম্যাসন তার সম্পর্কে একটি আর্টিকেলে বলেছেন, "তার ছিল আকর্ষণীয় এক কাঠামো, বৈশিষ্টে সুদর্শনীয়, সাথে স্বচ্ছ ফর্সা বর্ণ এবং লালচে বাদামী চুল...কেউ তাকে উপেক্ষা বা ছোট করতে পারবে না। তিনি সর্বদাই আবশ্যিক এবং অসীম রাজকীয়, এবং আমার কাছে মনে হয় যদি ভাগ্য তার সঙ্গ দিতো তিনি অবশ্যই বিশ্বের এক অন্যতম মহান রানী হতে পারতেন। "
হ্যা এখন আসি ভাগ্যের কাছে। এত জাকজমক বিয়ের পর পরই যেন সব বদলাতে শুরু করে। তিনি হায়েদ্রাবাদে আসার পর তার স্বামীর অধিক উপপত্নী সম্পর্কে জানতে পারেন। যা ছিল তৎকালীন সময়ের নবাবদের শখের মতো। উপপত্নীদের সংখ্যা যেন প্রমান করতো সেই সময়কার নবাবদের বিরত্ব। বেশ সময় দুররুশেহভার সুলতান এই সকল কিছু সহ্য করেছেন। তবে এই উপপত্নীদের জেরেই ক্রমে নবাব আজম ঝাঁ এবং দুররুশেহভার সুলতানার মাঝে সম্পর্কের ব্যবধান বাড়তে থাকে। আর একসময় এ সম্পর্কের অবসান ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর কয়েক বছর তিনি হায়েদ্রাবাদেই থেকেছিলেন। অতঃপর তিনি লন্ডনে চলে যান সন্তানদের নিয়ে, তাদের ভালো শিক্ষা দিতে। সেখানে ছেলেদের উচ্চশিক্ষিত করে তুর্কি মেয়েদের সাথে বিয়ে দেন। অতঃপর তার ছেলে মোকাররম ঝাঁ হায়েদ্রাবাদের নিজাম পদে ভূষিত হলে সে ১৯৮৩ সালে ছেলের তত্ত্বাবধানে দুররুশেহভার শিশু ও জেনেরাল হাসপাতাল, হায়েদ্রাবাদ নির্মান করান। এছাড়াও জীবনভর নানাভাবে পরিবারের কল্যানে, সমাজের কল্যানে, হায়েদ্রাবাদের নারীদের কল্যানে এবং নারী শিশু উন্নয়নে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তিনি। সম্পূর্ণ জীবন মানবকল্যানে ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৪ সালে সর্বশেষ হায়েদ্রাবাদে আসেন এবং ২০০৬ সালে লন্ডনে বসবাসরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তিনি পারিবারিক শত্রুতার কারনে মৃত্যুর পূর্বেই তাকে তুর্কিতে দাফন করতে না করে যান। যার কারনে মৃত্যুর পর তাকে যুক্তরাজ্যেই দাফন করা হয়।
এই ছিল দুই পর্বে মহান হেতিজা আয়শা দুররুশেহভার দুরদানা বেগম শাহেবা সুলতানের জীবন। যারা পর্ব ১ পড়েন নি তাদের জন্য নিম্নোক্ত লিংকঃ
( Durrushehver Sultan : The Ottoman Begum Sahiba of Hyderabad )
Source:
1. The Progressive Princess of Hyderabad
2. Tribute to the eldest Daughter-in-law of nizam vii Princess Durru shehver.
3. Princess Durru Shehver : A turkish Princess married to an indian Prince.
4. She Didn't want to br buried in turkey - by Ibrahim Dogan.

.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)

Social Plugin